শ্রীমঙ্গলে ১০ বছরের এক শিশুকে ৩ বছর আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহরের মুসলিমবাগ এলাকায় ‘পাখির বাসা’ নামক একটি বাসায় বাবা ও ২ ছেলে এই নির্যাতন চালাত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাধা দিলে গৃহকর্তীও শিশুটির উপর নির্যাতনে অংশ নেয়। ‘পাখির বাসা’র মালিক রনি শেখ ও তার পুত্র হাসান গত তিন বছর থেকে আরবি শেখানোর কায়দায় রুপার উপর শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালাতো।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সকালে পুলিশ মুসলিম বাগ থেকে ১০ বছর বয়সী রুপা অনামিকা নামে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
এর আগে শুক্রবার রাতে রুপা নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে পাশের বাসায় আশ্রয় নেয়। এ খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়রের ভাতিজা রাজ ও ভাই শাহীন আহমেদ ও ইসমাইল হোসেন নামে কয়েক যুবক শিশুটিকে উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়। তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ও স্থানীয়দের সামনে শিশুটি তার উপর নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। এসময় পুলিশ ওই বাসা থেকে শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগে রনি শেখের পুত্র হাসানকে আটক করে।
নির্যাতিত শিশু রূপা অনামিকা মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার চম্পারাই চা বাগানের বলে জানিয়েছে। সে তার বাবার নাম বলতে পারেনি। বাদল নামে এক কাকাকে সে বাবা বলে জানতো।
রূপা জানায়, ‘ছোট বেলায় তার বাবা মারা যায়। সেই থেকে কাকা বাদল অনামিকাকে সে বাবা বলে জানে। প্রায় ৩ বছর আগে বাদল কাকা শ্রীমঙ্গলের এই বাসায় কাজের জন্য রেখে যায়। এরপর তার বাবার মতো কাকা বা মা কেউ তাকে কখনও দেখতে আসেনি। ফোনেও খোঁজ নেয়নি। আর এই তিন বছর রনী শেখ ও তার ছেলে হাসান তার উপর অমানুষিক যৌন নির্যাতন চালায়। পা টিপে দেয়ার কথা বলে বিবস্ত্র করে অকথ্য নির্যাতন করতো। বাধা দিলে লাথি দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিত। রনী শেখ এর স্ত্রী রোশনা বেগমও তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করতো। গলা টিপে শূণ্যে উঠাতো ও নামাতো’। এসময় রূপা কাঁদতে কাঁদতে তার জামার অংশ খুলে পিঠে বিভিন্ন ক্ষত দেখায় স্থানীয়দের।